সফিকুল ইসলাম রাজাঃ পাহাড়ের ঢালে বাঁশ পুঁতে চার দিকে তোলা হয়েছে ঝুপড়ি ঘর; তার ওপরে থাকা পলিথিনের ছাউনি বৃষ্টি ঠেকাতে পারছে না। বৃষ্টির পানি পাহাড় বেয়ে ঘরের ভেতরে নানা দিকে পড়ছে। আবার অনেক রোহিঙ্গা পাহাড় কেটে করেছে বসতি। এই কাটা পাহাড় দৃশ্যমান না হওয়ার জন্য দেওয়া হয়েছে নানা রঙের পলিথিন। ঝুম বৃষ্টিতেও পাহাড়ে খাদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বৃষ্টির পানি থেকে বাঁচতে কাজ করছে রোহিঙ্গারা।
যতদূর চোখ যায়, পাহাড়ের ওপর বা নিচে গায়ে গায়ে লাগানো অসংখ্য ঝুপড়ি ঘর ভারি বৃষ্টিতে ভিজছে। ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে ঝুপড়ি ঘরে আশ্রয় নিয়ে বর্ষা মৌসুম পার করছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা।
তারা বলছে, টানা বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড় ধসের শঙ্কায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছে তারা।
একজন রোহিঙ্গা শরণার্থী বলেন, যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে আমাদের ভয় লাগছে কখন দুর্ঘটনা ঘটে।
অপর এক রোহিঙ্গা শরণার্থী বলেন, প্রচণ্ড বৃষ্টিতে পলিথিনের ঘরই টিকছে না। তারপর যদি পাহাড় ধসে তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
বৃষ্টি হলেও পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসরত রোহিঙ্গাদের সরে গিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য সচেতনতার কাজ করে ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ ও ফায়ার সার্ভিস। কিন্তু অনেক রোহিঙ্গা তা শুনতেই চান না বলে জানালেন তারা।
কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা তাদেরকে বারবার বলছি- ঝুঁকিপূর্ণ সময়। এখান থেকে সরে যান। কিন্তু তারা এখানেই থাকছেন।
আর অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার জানালেন, পর্যায়ক্রমে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
অতিরিক্ত কমিশনার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন মো. সামছু-দ্দৌজা বলেন, এটা চলমান প্রক্রিয়া। আমরা ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো থেকে তাদের সরিয়ে নিচ্ছি। আমাদের ৩৪টি ক্যাম্পেই স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে এই কাজ চলছে।
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয় শিবিরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে গিয়ে উজাড় করা হয়েছে ৮ হাজার একরের বেশি বনভূমি।