সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দল (বিএনপি)’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবীতে নীলফামারীর সৈয়দপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪ টায় সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা ছাত্রদলের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ আয়োজন করা হয়।
সারাদেশের মত সৈয়দপুরেও শহরের শহীদ ডাঃ জিকরুল হক রোডে জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মোঃ মামুন খান।
সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রেজওয়ান আক্তার পাপ্পুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বাবুর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহবায়ক ও সাপ্তাহিক জনসমস্যা সম্পাদক প্রভাষক শওকত হায়াৎ শাহ, যুগ্ম আহবায়ক শামসুল আলম সরকার,
সদস্য সচিব ও পৌর কাউন্সিলর শাহিন আকতার শাহিন, বিএনপি নেতা আব্দুল খালেক এবং
পৌর বিএনপি’র আহ্বায়ক শেখ বাবলু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি, পৌর বিএনপি’র আহ্বায়ক ও পৌর কাউন্সিলর এরশাদ হোসেন পাপ্পু, সাধারণ সম্পাদক এম এ পারভেজ লিটন, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর তারিক আজিজ।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুজাউল হক সাজু, সহ-সভাপতি আবু নাসিম মিঠু, যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সভাপতি পারভেজ আলম গুড্ডু, সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান ইসলাম, সাবেক ছাত্রদল নেতা আমজাদ হোসেন টিটু এবং
সৈয়দপুর ছাত্রদলের উপজেলা আহ্বায়ক আবু সাইদ, সদস্য সচিব এ বি জয়, পৌর শাখার আহবায়ক মুহিত চৌধুরী, সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, কিশোরগঞ্জ উপজেলা আহ্বায়ক ইবনে সাঈদ সুজন, সদস্য সচিব রাসেল প্রামাণিক প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, দূর্নীতি, সন্ত্রাস, লুটপাট, গুম, খুনের রাজত্ব কায়েম করে গণতন্ত্রের কবর রচনাকারী রাতের ভোটে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা ডিজিটাল স্বৈরাচার হাসিনা সরকার গণতন্ত্রের মানসকন্যা, আপোষহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যে মামলায় সাজানো রায় দিয়ে কারাগারে নিক্ষেপ করেছে।
সেখানে চিকিৎসার নামে কৌশলে বিষ প্রয়োগে তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রীকে তিলে তিলে শেষ করে দেয়ার ঘৃণ্য অপচেষ্টা চালিয়েছে। যে কারনে আজ খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আইনের দোহাই দিয়ে তাঁকে মুক্তি না দিয়ে বিদেশে সুচিকিৎসা নিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে।
অথচ আইনের শাসন আর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আজ দেশ থেকে উধাও। আওয়ামীলীগের অবৈধ সরকার খুনের আসামীকে ক্ষমা করে দিলেও দেশের সর্ববৃহৎ দলের প্রধানকে ঠুনকো অজুহাতে বন্দি রেখে একের পর এক দেশ ও জন বিরোধী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
খালেদা জিয়া সুস্থ ও সক্রিয় থাকলে তারা দূর্নীতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করতে পারবেনা। দেশকে ভারতের করদরাজ্য বানাতে পারবেনা। একারনে জুলুমবাজ এ সরকার তাঁকে নিয়ে ন্যাক্কারজনক প্রতিহিংসার খেলায় মেতেছে। তাদের খেলা একদিন তাদেরই গলার কাটায় পরিনত হবে।
অচিরেই এ খেলা শেষ হবে। জনতা জেগে উঠেছে। জনরোষেই তামাশার সরকারের পতন ঘটবে। এজন্য সকলকে আগামী দিনের একদফার আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান বক্তারা। তারা অনতিবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়ার দাবী জানান।
নয়তো বৃহত্তর আন্দোলনের হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, পুলিশ র্যাব, সেনাবাহিনী তথা প্রশাসন আর বেশীদিন খুনি অত্যাচারী হাসিনা সরকারকে টিকিয়ে রাখতে পারবেনা। খালেদা জিয়ার কিছু হলে সৈয়দপুর থেকেই উচিৎ জবাব দিতে সৃষ্টি হবে গণ আন্দোলন।
যে আন্দোলনের শক্তি শহীদ জিয়ার আদর্শ। যে শক্তি অতীতেও সকল ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে যেমন দেশপ্রেমিক জনতার শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিল। তেমনিভাবে এখনও বিপ্লব ঘটিয়ে আবারও দেশবাসীকে তাবেদার সরকারের অপশাসন থেকে মুক্ত করবে।
গণতন্ত্রকামী বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী জনমানুষের অধিকার পূনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। সেদিন এই চক্রান্তকারী জনধিকৃত আওয়ামীলীগ পালানোর পথ খুঁজে পাবেনা। যার নজির ইতোমধ্যে দেখা যাচ্ছে।
ইউপি নির্বাচনে একজন হিজরার কাছে পরাজিত হয়েছে নৌকার প্রার্থী। সুষ্ঠু নির্বাচন দিলে এভাবেই প্রতিটি ক্ষেত্রে পরাভূত হবে এই স্বৈরশাসক। কারণ তাদের কর্মকান্ডে জনগণ এতটাই বিতৃষ্ণ যে বাকশালীদের জনপ্রিয়তা চরম তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে। তাই তারা মৌলিক অধিকার হরণ করে গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকার পায়তার করছে।
কিন্তু বাংলাদেশের আপামর জনগণের ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে গেছে। সহ্যের সীমা ছেড়ে দেয়ালে পিঠ ঠেকেছে। অতএব পরিবর্তন অবশম্ভাবী হয়ে উঠেছে। এরপরও যদি সরকারের বোধোদয় না হয় তাহলে পরিণতির জন্য তারাই দায়ী থাকবে।
সমাবেশে সৈয়দপুর ও কিশোরগঞ্জ উপজেলা এবং সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা ছাত্রদলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।