সিলেটে লকডাউনের মধ্যেও গভীর রাত অবধি চলছে ঈদের কেনাকাটা। গত সোমবার রাত ১টা পর্যন্ত নারীদেরও ঈদের কেনাকাটা করতে দেখা যায়।
সরেজমিন জিন্দাবাজারে বেশ কয়েকটি জুতার দোকান এবং কয়েকটি শিশু শপ খোলা দেখা যায়। তাছাড়া করিম উল্লাহ মার্কেট, হাসান মার্কেট ও হকার্স মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা অনেক লোকের মুখেও দেখা যায়নি মাস্ক।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিভাগীয় নগরীতে রাত ৮টা পর্যন্ত দোকানপাট-শপিং মল খোলা থাকার কথা। কিন্তু নগরীর জিন্দাবাজার, নয়াসড়ক, কুমারপাড়া এলাকায় দেখা গেছে, ৮টায় তো দোকানপাট বন্ধই হচ্ছে না, উপরন্তু মধ্যরাত অবধি বিভিন্ন স্থানে চলছে কেনাকাটা। ব্যস্ত শপিংমলগুলো স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই লোকজনকে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। সিলেটে একমাত্র ‘আড়ং’-এর শার্টার নির্ধারিত সময় রাত ৮টায় বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ নিয়ম মানা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। নগরীর মধুবন মার্কেটের সম্মুখে গত সোমবার রাত ১টায় কয়েকজন তরুণীকে শপিং করে ফিরতে দেখা গেছে। এছাড়া জুতার দোকানে দেখা গেছে বিভিন্ন বয়সি মানুষের ভিড়। এদিকে ঈদকে সামনে রেখে শপিংমলগুলোতে পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে কেনাকাটার চিরচেনা সেই ব্যস্ততা নেই বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
গত বছর করোনার প্রথম দাপটে সামর্থ্য থাকার পরও অন্যরকম ঈদ উদযাপন করেছেন সবাই। এবারও করোনার ভয়াবহতা তাড়া করছে প্রতিনিয়ত। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের দাবির বাস্তবতায় ঈদের আগে দোকানপাট-শপিংমল খুলে দেওয়া হয়েছে। নয়াসড়কে সেইলর নামে একটি ফ্যাশন হাউসে শিশু সন্তান নিয়ে এসেছেন আমিন
দম্পতি। তারা জানান, বাচ্চাদের পোশাকের জন্য এসেছি। দোকানপাট সবই খোলা। কিন্তু ক্রেতা নেই বললেই চলে। তবে কিছু প্রতিষ্ঠান ব্যতিক্রম। তাদের দোকানে কিছু ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। গুলজার নামে আরেক ক্রেতার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা অনেক আশা নিয়ে কিছু সময়ের মধ্যে দোকানগুলো সাজিয়েছেন। কিন্তু আশানুরূপ ব্যবসা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। ঈদের আগ পর্যন্ত কতটা হবে না হবে সেটাও বোঝা যাচ্ছে না। কারণ এরই মধ্যে আরেক দফা বেড়েছে লকডাউন।
নয়াসড়কের একজন ব্যবসায়ী বলেন, গতবছর করোনা মহামারিতে ঘরে বসে খেয়েছি। এবার ঈদে কী হবে জানি না। বিক্রির যা অবস্থা, তাতে কর্মচারীদের বোনাস তো দূরে থাক, বেতন দেওয়াই কঠিন হয়ে পড়বে। রায়নগর দাদাপীর মাজার সড়কে ফ্যাশন হাউস থ্রি-সিস এক্সক্লুসিভের কর্ণধার ফেরদৌসী আক্তার জানান, অনেক বিনিয়োগ ঈদকে সামনে রেখে। করোনার সময় এখন পর্যন্ত ব্যবসা মোটামুটি হচ্ছে। তবে সামনে হয়তো আরো ভালো হবে এমনটা আশা করছি। জিন্দাবাজার সহির প্লাজার ফ্যাশন হাউস বৈতালিকের কর্ণধার নিরঞ্জন দে জানান, এ বছর প্রস্তুতি নিয়েছিলাম পহেলা বৈশাখে ব্যবসা করব, ঈদে ব্যবসা করব। কিন্তু লকডাউন হওয়ার কারণে আমরা ব্যবসায়ীরা অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত। ঈদের আগে দোকান খোলা হলেও বসে বসে সময় পার করতে হচ্ছে। ঈদের আগে যদি কিছু ব্যবসা হয়, তাহলে হয়তো কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারব। মধুবন সুপার মার্কেটের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, মার্কেট খোলা থাকায় মোটামুটি ব্যবসা হলেও অতীতের মতো নয়। এর মধ্যে চলছে লকডাউন। আগামীতে কি হবে জানি না।
আলোকিত সিলেট/৯মে/এমবিএইচ