সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠেছে। বেড়েই চলছে নদীর পানি। সেই সাথে নতুন নতুন এলাকা আক্রান্ত হচ্ছে। পুরো জেলাজুড়ে চলছে হাহাকার।
বন্যা আক্রান্ত বেশিরভাগ উপজেলায় পা রাখার মতো শুকনো মাটি নেই। আক্রান্ত এলাকায় পানিবন্দি লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনতে উদ্ধার কাজে নামানো হয়েছে সেনাবাহিনী। শনিবার (১৮ জুন) থেকে উদ্ধার কাজে নৌবাহিনীও যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
বন্যার্তদের উদ্ধারে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি শনিবার সকাল থেকে নৌবাহিনীও কাজ শুরুর কথা রয়েছে। সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান জানিয়েছেন, রাতের মধ্যেই নৌবাহিনীর সদস্যরা সিলেটে এসে পৌঁছার কথা রয়েছে।
শনিবার সকালে তারা প্রথমে সালুটিকরে অবস্থান নেবেন। পরে সেখান থেকে তারা উপদ্রুত এলাকায় গিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করবেন।বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষে উদ্ধার কাজ চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় শুক্রবার (১৭ জুন) সকালে উদ্ধার কাজসহ সার্বিক সহযোগিতার জন্য সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চান জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান।
জেলা প্রশাসকের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে গতকাল শুক্রবার দুপুর থেকে সিলেট ও সুনামগঞ্জের ৮টি উপজেলায় সেনাবাহিনীর ৯টি টিম কাজ শুরু করেছে। ‘রেসকিউ বোট’ দিয়ে তারা গ্রামে গ্রামে গিয়ে পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার করে নিয়ে আসছে।
কানাইঘাটে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে।৯নং রাজাগঞ্জ, ৮নং ঝিঙ্গাবাড়ী, ৭নং দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের সমস্ত গ্রামীণ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
শত শত বাড়ি ঘরে বন্যার পানিতে আক্রান্ত হওয়ায় পানিবন্দি মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রসহ বিভিন্ন উঁচু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন। প্রত্যন্ত এলাকার সমস্ত জনপদে বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার কারণে গবাদি পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন মানুষজন।
আজ সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট সীমান্তে বিপদসীমার ১২৮ সে. মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও হাওর অঞ্চল দিয়ে পানি হু হু করে বাড়ার কারণে ৯নং রাজাগঞ্জ, ৮নং ঝিঙ্গাবাড়ী, ৭নং দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের সমস্ত গ্রামীণ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। এলাকার মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছেন। নৌকার অভাবে প্রত্যন্ত এলাকার পানিবন্দি মানুষ খোঁজ খবর নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
বিশেষ করে হাওর অঞ্চলগুলোর মধ্যে ফাগু,ঝিংগারখাল,বাঁশবাড়ী,কটালপুর,কাপ্তানপুর,লামা ঝিংগাবাড়ী,পূর্বগ্রাম,আগফৌদ নারাইনপুরের অনেকে অনাহারে অর্ধাহারে ঝুঁকি নিয়ে জীবন যাপন করছেন। পানিবন্দি প্রত্যন্ত অঞ্চলের আটকেপড়া মানুষদের উদ্ধারের জন্য প্রশাসন সহ সবাইকে এগিয়ে আসার জন্য সু দৃষ্টি কামনা করছি ।
এবারের বন্যায় হাওয়রাঞ্চল দিয়ে হু হু করে পানি বাড়ার কারণে আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মানুষজন। সড়ক দিয়ে আরো বেশি স্রোতে পানি প্রবাহিত করার কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে এবং সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।।এমনকি বিভিন্ন গ্রামে সুরমা ডাইক তালিয়ে গিয়েছিল এলাকার বাসিন্দারা ডাইক বাদ দিয়ে কিছুটা হলেও রক্ষা পেয়েছে। পরিশেষে আমাদের কানাইঘাটের প্রতি আপনার একান্ত সুদৃষ্টি কমানা করছি।