প্রাণঘাতী করোনার নমুনা পরীক্ষা ও শনাক্তের হার বিবেচনায় দেশের সব জেলার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে চায়ের দেশ মৌলভীবাজার। একই সাথে সংক্রমণ ও ভয়াবহতার পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে সিলেট।
বুধবার (৩১ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, মৌলভীবাজারের পর দ্বিতীয় অবস্থানে মুন্সীগঞ্জ, তৃতীয় চট্টগ্রাম, চতুর্থ ঢাকা ও পঞ্চম অবস্থায় রয়েছে সিলেট। সারা দেশে করোনা সংক্রমণের পরীক্ষার ভিত্তিতে এ পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়।
সংক্রমণের হারে সিলেট পাঁচ নম্বরে থাকলেও এখন পর্যন্ত করোনা প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সিলেট জেলা প্রশাসন। এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে ঢিলেঢালা অভিযান আর পরিস্থিতি মনিটরিং করছে তারা। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে সিলেটে প্রায় দ্বিগুণ হারে বেড়ে যাওয়ার মত কারণে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের বেডসংখ্যা নিয়ে নতুন করেছে ভাবিয়ে তুলেছে সংশ্লিষ্টদের। এ নিয়ে দফায় দফায় আলোচনায়ও বসছেন তারা।
এদিকে করোনা প্রতিরোধে সিলেট জেলা প্রশাসন এখন পর্যন্ত কঠোর সিদ্ধান্ত না নিলেও সুনামগঞ্জে ওরস-বারুণী মেলা বন্ধ ও পর্যটনস্পটে জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জেলা প্রশাসন।
অপরদিকে সংক্রমণ রোধে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ১ এপ্রিল থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টার পর মৌলভীবাজার জেলার সব দোকানপাট বন্ধ করতে প্রশাসন থেকে মাইকিং করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, ‘আমরা কয়েকদিন ধরে স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে জেলাব্যাপী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি। ১ এপ্রিল থেকে আমরা আরও কঠোর হব।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান, জেলাব্যাপী সব ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিয়ে, ওয়াজ, কীর্তন কিছুই করা যাবে না। এত দিন আমরা স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে প্রচার চালিয়ে আসছিলাম। কাল থেকে জেলাব্যাপী আরও গতি বৃদ্ধি করা হবে। সেই সঙ্গে বন্ধ থাকবে সব পর্যটন স্পট।
মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র মো. ফজলুর রহমান জানান, করোনা প্রতিরোধে প্রত্যেককে সচেতন হতে হবে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। পৌর নাগরিকদের সচেতন রাখতে পৌর এলাকার নয়টি ওয়ার্ডে রাত ৮টার মাইকিং করা হয়।
জেলা সিভিল সার্জন চৌধুরী ডা. মো. জালাল উদ্দিন মুর্শেদ জানান, গত ১১ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত মোট ৪১৪টি করোনা পরীক্ষার মধ্যে পজিটিভ আসে ৯২ জনের। ওই সময়ে মৃত্যু হয় দুজনের। সংক্রমণের হার ২২.২ শতাংশ। সংক্রমণের দিক থেকে এক নম্বরে আছে মৌলভীবাজার, এই তথ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে আমাদের জানানো হয়েছে। জেলায় এখন পর্যন্ত মোট করোনা পজিটিভ রোগী দুই হাজার ৩৯ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ২৪ জন।