সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার কালীগঞ্জ বাজার সংলগ্ন ‘মেসার্স আল-আমিন ব্রিক ফিল্ডের’ সত্ত্বাধিকারী ও সদর ইউনিয়নের চৌধুরীগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ইর্শাদ আলী এবং তার দুই পুত্র কামরুল ইসলাম ও নাজমুল ইসলাম প্রতারণা করে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ১৫৪ জন গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ৩০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
আর ঈর্শাদ আলী গংদের করা আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরত পেতে প্রশাসনসহ সর্বমহলের সার্বিক সহযোগীতা চেয়ে
আজ বুধবার (১১ আগষ্ট) সকাল ১১টায় বিশ্বনাথ পৌর শহরের একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভোক্তভোগীরা।
ওই সংবাদ সম্মেলনে ঈর্শাদ আলী গংরা প্রতারণা করে মানুষের প্রায় ৩০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন এমন অভিযোগ করেছেন ভোক্তভোগীরা।
ভোক্তভোগীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দেওকলস ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার ও ধোপাকলা গ্রামের মুহিবুর রহমান বাচ্চু।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘একই উপজেলার কালীগঞ্জ বাজার সংলগ্ন ‘মেসার্স আল-আমিন ব্রিক ফিল্ডের’ সত্ত্বাধিকারী ও সদর ইউনিয়নের চৌধুরীগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ইর্শাদ আলী এবং তার দুই পুত্র কামরুল ইসলাম ও নাজমুল ইসলাম তাদের ব্রিক ফিল্ডকে পুঁজি করে স্থানীয় এলাকার প্রায় দুই শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় কোটির টাকার উপরে হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। তারা পিতা-পুত্র প্রত্যেক মৌসুমে বিভিন্ন হারে স্থানীয়দের কাছে অগ্রিম কাঁচা ইট বিক্রি করে। একইভাবে আমাদের বেশ কয়েকজনের কাছেও অগ্রিম কাঁচা ইট বিক্রি করে। যে ইটগুলো পুড়িয়ে পরবর্তীতে আমাদেরকে বুঝিয়ে দিতে চুক্তিও সম্পাদন করে তারা। আমরা স্থানীয় অনেকেই ব্যবসার নিমিত্তে বিভিন্ন সময়ে চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট ভাউচার ও চেকের মাধ্যমে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ইটভাটা মালিক ইর্শাদ আলী ও তার দুই পুত্রের কাছে হস্তান্তর করি। নির্দিষ্ট সময়ে আমাদেরকে পুড়ানো ইট বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও সেটা না করে তারা বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করে। অথচ, ওই পিতা-পুত্র আমাদের ইট অন্যত্র বিক্রি করে ঠিকই মুনাফা লুটছে। আমরা আমাদের পুড়ানো ইট চাইতে গেলে আমাদেরকে চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়ে মামলা ও হামলার হুমকি দিয়ে আসছে। যে কারণে গত ৪ জুলাই তাদের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথ থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছি আমরা।
এছাড়াও ইতোপূর্বে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি, সিলেটের জেলা প্রশাসক, বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বরাবরে অভিযোগও দিয়েছি।
এক পর্যায়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি পংকি খানসহ গণ্যমাণ্য ব্যক্তিদের মধ্যস্ততায় তারা আমাদের ঋণ পরিশোধ করার নিমিত্তে বিভিন্ন সমঝতা চুক্তি করে।
এক পর্যায়ে সকল পাওনাদারদের তালিকা ও ঋণের পরিমান উল্লেখ করে তালিকা তৈরী করেন সালিশকারীরা। তখন ইটভাটা সচল রাখার স্বার্থে মুরব্বীদের পরামর্শে তারা আরও ১৯ লাখ ৫০ হাজার ইট বিক্রি করে। এর কিছুদিন পর তারা সালিশ অমান্য করে চুক্তি ভঙ্গসহ ফের প্রতারণার আশ্রয় নেয় ঈর্শাদ আলী গংরা। বর্তমানে তারা নিজেরাই ব্রিক ফিল্ডে বিভিন্ন ঘটনা সাজিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলাসহ বিভিন্ন কায়দার হয়রাণির চেষ্টা করছে। এতগুলো পাওনা টাকা না পেলে পথে বসার উপক্রম হবে আমাদের।
এ জন্যে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মহরম আলী, দবিরুল ইসলাম মেম্বার, ছাতির আলী, আরশ আলী রেজা, লালা মিয়া, আহমেদ-নূর উদ্দিন, ফজর আলী মেম্বার, আখতার ফারুক, ফরিদ মিয়া, সুবোধ রঞ্জন পাল, মনসুর আহমদ, আবদুস শহীদসহ অসংখ্য পাওনাদার।