২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। ইউপি নির্বাচনের দুদিন পর কেন্দ্রের পাশের পুকুর থেকে তিন শতাধিক সিল মারা ব্যালট পেপার উদ্ধার হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের বামনদিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র পার্শ্ববর্তী পুকুরে ব্যালটগুলো পাওয়া যায়। সেগুলো স্থানীয়রা তুলে সংলগ্ন বাঁশঝাড়ে রাখলে চারঘাট থানা পুলিশ উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা জানান, কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী একটি পুকুরে ব্যালট পেপার ভাসতে দেখেন স্থানীয় শ্রমিকরা। প্রায় তিন শতাধিক ব্যালট পেপার উদ্ধার করে স্থানীয়রা পুকুর সংলগ্ন বাঁশঝাড়ে রাখেন। মঙ্গলবার দুপুরে এসব ব্যালট পেপার পাওয়া যায়। এরমধ্যে নৌকা, স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতীকে সিল মারা ব্যালট পেপারগুলোর সঙ্গে সংরক্ষিত নারী সদস্যদের ব্যালটও রয়েছে। পরে সন্ধ্যার দিকে চারঘাট থানার এসআই আনোয়ার ফোর্স নিয়ে এসে সেগুলো উদ্ধার করে নিয়ে যান। পুকুরে সিল মারা ব্যালট পাওয়ায় স্থানীয়দের মাঝেও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
নির্বাচনে টিউবওয়েল প্রতীকে সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী আতাহার আলী বলেন, ‘এখন সরকারি কাগজ বাঁশঝাড় আর পুকুরে পাওয়া যায়। এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে? নির্বাচনের সময় আমরা বুঝতে পেরেছিলাম অনিয়ম হচ্ছে। এখানে ভোট গণনা না করেই দায়িত্বরত কর্মকর্তারা ব্যালট পেপার নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। ভোটাররা বাধাও দিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত এখানে ফল জানানো হয়নি। দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব ছিল, যে প্রক্রিয়ায় এই ব্যালট পেপার এখানে এসেছে সে প্রক্রিয়ায় নির্বাচন শেষে অফিসে পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু সেগুলো মিলছে পুকুর আর বাঁশঝাড়ে! এ বিষয়ে অবশ্যই দায়িত্বে অবহেলার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’
শলুয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কেন্দ্রটি হলো বামনদিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ওই ওয়ার্ডে সাত জন সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। নির্বাচনের দিন ভোট গণনার শেষ পর্যায়ে কয়েকজন ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ভোটে অনিয়ম হয়েছে দাবি জানিয়েছেন। তারা দায়িত্ব পালনকারীদের অবরুদ্ধ করেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কর্মকর্তা রবিউল আলম জানান, ভোটের দিন সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ভোট গণনা করে সিলগালা অবস্থায় ব্যালট পেপার নির্বাচন অফিসে জমা দিয়েছেন। এ অবস্থায় কোথাও ব্যালট পেপার পাওয়া গেলে উদ্ধার করে বিষয়টি তদন্ত করা হবে।
এ বিষয়ে ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, গণনা শেষে সব ব্যালট পেপার জমা দেওয়া হয়েছে। আর ব্যালট পেপার উদ্ধারের বিষয়ে তার জানা নেই।
এ বিষয়ে চারঘাট থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। নির্বাচন কর্মকর্তা জানেন।’