বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে কয়েকগুণ লোকসানে পটুয়াখালীর পান চাষীরা কম দামে বিক্রি করে দুর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছে। খুচরা বিক্রেতা সুনিল দাস, গোবিন্দ দেবনাথ , আলামিন ও ফারুক জানান, ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা দরের বড় পানের দাম (স্থানীয় ভাষায় চলি) এখন ১০ থেকে ১৫ টাকা।
ছোট ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা দরের পানের চলি এখন বিক্রি হচ্ছে ০৫ থেকে ০৭ টাকা। পটুয়াখালী খুশি সুপার মার্কেটের সামনে বসা পানের হাট ঘুরে খুচরা এবং পাইকারি বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। বিক্রেতারা বলছেন, করোনাভাইরাসের কারণে টানা ২ বছর কম দামে পান বিক্রি করতে হয়েছে। দফায় দফায় বন্যায় পান বরজের ব্যাপক ক্ষতিও হয়েছে। বর্তমান বাজারে পানের দাম কম থাকায় লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে। দুমকি উপজেলার পান চাষী গৌতম দাস ও ধরান্দীর সানু হাওলাদার বলেন, মহামারী করোনাকালীন সময় দুমকিতে আরৎদারের কাছে পান নিয়ে আসলে দাম কম পাওয়ায় পরিবার নিয়ে ভরনপোষন করতে কষ্ট হচ্ছে।
অন্যদিকে প্রত্যেক পান চাষীদের সরকারি এবং বেসরকারী সংস্থা থেকে ঋন নিয়ে পানের বরজ করছেন। যে পরিমাণ ঋন নিয়ে চাষাবাদ করা হয়েছে সে পরিমান লাভ করা সম্ভব হবে না। দুমকি আরৎদার শুকলাল চন্দ্র নন্দী বলেন, দুমকিতে পটুয়াখালী, গলাচিপা, বাকেরগঞ্জ, বাউফল এলাকার পান চাষীরা বিক্রি করার জন্য প্রতি রবিবার ও বুধবার পান নিয়ে আসলেও পানের দাম কম থাকায় সঠিক দাম দিতে পারছি না। চলতি বছর পটুয়াখালীতে পানের বাম্পার ফলনেও হাসি নেই চাষীদের মুখে। ভরা মৌসুমেও পানের দাম না পেয়ে দুশ্চিন্তায় চাষীরা।
করোনাকালীন পরিবহন সংকট ও বিদেশে পান রপ্তানী বন্ধ থাকায় পানের দাম কম পাচ্ছি এবং চরমভাবে লোকসান গুনতে হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মেহের মালিকার সাথে কথা বললে তিনি জানান, প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে চাষীরা পান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। উপজেলার জলিশা, মুরাদিয়া,আংগারিয়া, আলগী ও পাংগাশিয়া এলাকায় পানের বরজ রয়েছে। জলিশার পান চাষী তপন ও কমল বলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সরকারি কোন বরাদ্দ নেই। অর্থ বরাদ্ধের বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তা বলেন, সরকারি ভাবে দুমকি উপজেলার বিপরীতে পান চাষীদের জন্য কোন বরাদ্ধ নেই। তারপরও আমাদের কর্মকর্তারা চাষীদের বিভিন্ন সময় পরামর্শ দিয়ে থাকেন।