সিলেটের চুনারুঘাট উপজেলার ৬ নং সদর ইউনিয়ন পরিষদের অন্তর্গত জিকুয়া গ্রামের জরিনা বেগমের জরাজীর্ণ ঘরের ভিডিওটি উপজেলা প্রশাসনের ইনবক্সে পাঠান একজন প্রতিবেদক ও সংগঠক এফ এম খন্দকার মায়া। তখন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সত্যজিত রায় দাশ ভিডিওটি দেখে সাথে সাথেই এসিল্যান্ড মিলটন চন্দ্র পালকে ফরওয়ার্ড করেন এ পরিবার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের জন্য।
এসিল্যান্ড সাথে সাথেই পোস্ট দাতার সাথে যোগাযোগ করে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করেন।
এসিল্যান্ডের দেয়া তথ্য থেকে নির্বাহী অফিসার জানতে পারেন জরিনা বেগম গৃহহীন হলেও ৪ শতাংশ ভূমির মালিক। এখানেই নতুন বসতঘর নির্মাণ করা হলে তিনি ভীষণভাবে উপকৃত হবেন।
জানা গেছে- মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী চুনারুঘাট উপজেলার সকল ‘ক’ তালিকাভুক্ত ভূমিহীন ও গৃহহীন ব্যক্তিদের জন্য গৃহনির্মাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে উপজেলা প্রশাসন, চুনারুঘাট।
প্রথম পর্যায়ে ইকরতলীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন ৭৪টি বাসগৃহ। প্রথম পর্যায়ের অবশিষ্ট ৬টি বাসগৃহ নির্মাণ করা হয় পানছড়ি আশ্রয়নে। বর্তমানে দ্বিতীয় পর্যায়ের ত্রিশটি ঘর নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে রানীগাঁও ইউনিয়নে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী আরো ৩০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের হাতে তুলে দিবেন দ্বিতীয় পর্যায়ের বাসগৃহগুলো।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী চুনারুঘাট উপজেলার প্রতিটি গৃহহীন মানুষকে বাসগৃহ নির্মাণ করে দেয়ার প্রত্যয় বুকে নিয়ে মুজিববর্ষে শুরু থেকেই নিষ্ঠার সাথে কাজ করছেন উপজেলা প্রশাসনের সকলে।
এরই ধারাবাহিকতায় রোববার (১৬মে) বিকাল ৫টায় চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির লস্কর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সত্যজিত রায় দাশ ও চুনারুঘাটের এসিল্যান্ড মিল্টন চন্দ্র পাল সরেজমিনে এযুগের “আসমানী” জরিনা বেগমের বাসগৃহ পরিদর্শন করেন। পরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির লস্করের পরামর্শে আগামী দুইদিনের মধ্যে জরিনা বেগমের জরাজীর্ণ ছাউনির স্থলে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে নতুন পাকা বাসগৃহ নির্মাণের কাজ শুরুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সমাজসেবক মো. রফিকের লাইভ ভিডিওটি এফ এম খন্দকার মায়ার মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসার পরবর্তীতে চুনারুঘাট উপজেলার কৃতিসন্তান ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের বাবুল হোসেন বিষয়টি ফের সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেন। এর প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের প্রতিও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।
এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সত্যজিত রায় দাশ বলেন- মুজিববর্ষে চুনারুঘাট উপজেলা প্রশাসন এমনই অসহায় ও দরিদ্র মানুষকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পৌঁছে দিতে খুঁজে চলেছে নিরন্তর। তিনি আর্তমানবতার সেবায় সকলকে এমন গৃহহীন ও দুস্থ মানুষের তথ্য দিয়ে উপজেলা প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য সবার প্রতি বিনীতভাবে অনুরোধ জানান। সেইসাথে প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যয় অনুসরণ করে বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলের মত চুনারুঘাট উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত করতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানানো হয়।
আলোকিত সিলেট/১৬মে/এমবিএইচ